কন্যা সন্তান মানেই দায়! বর্তমান যুগেও এমন ধারণাটা অনেকের মধ্যেই বিরাজমান। বিশেষ করে প্রথম সন্তান মেয়ে হলে বাবার মুখটা কালো হয়ে যায়। হারিয়ে যায় তার মুখে থাকা সন্তুষ্টির হাসিটি।
ভাবনাটা এটাই থাকে যে, খরচ বাড়ল সঙ্গে অনেক অনেক চিন্তা। শেষ বয়সের ভরসাটাও হারিয়ে ফেলেন বাবারা। অনেকেতো এই দায় থেকে নিজেকে বাঁচাতে কন্যাসন্তানকে হত্যাও করে ফেলে। এমন ঘটনা নতুন কিছু নয়। নিত্যনতুন এসব ঘটনার সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত।
তবে ইউরোপে ঘটছে একদমই ভিন্ন ঘটনা। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, কন্যা সন্তানের বাবার আয়ু তুলনামূলক বেশি হয়। তারা অন্য পুরুষদের চেয়ে বেশিদিন বাঁচেন। অবশ্য লিঙ্গ নির্বিশেষে সন্তান জন্মদান মহিলাদের আয়ু কমিয়ে দেয় এ ব্যাপারে প্রায় সব গবেষক একমত।
পোল্যান্ডের জাগিলোনিয়ান ইউনির্ভাসিটির সম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, পুত্র সন্তান তাদের পিতার আয়ুর ওপর কোনো প্রভাব ফেলে না। তবে কন্যা সন্তানের সংখ্যার সঙ্গে পিতার লম্বা আয়ুর সমানুপাতিক সম্পর্ক রয়েছে।
গবেষণার রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, পুরুষের কন্যা সন্তানের সংখ্যা যত বেশি, আয়ুও ততই বেশি। সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে, প্রতিটি কন্যা সন্তানের জন্য বাবা ৭৪ সপ্তাহ বা ৫১৮ দিন বা প্রায় দুই বছর অতিরিক্ত আয়ু পান।
২ হাজার ১৪৭ জন মা এবং ২ হাজার ১৬৩ জন বাবার ওপর সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। এ গবেষণার মূল লক্ষ্য ছিল, একটি সন্তান জন্মের পর বাবার মানসিক ও শারীরিক অবস্থা কেমন থাকে সেটি পর্যবেক্ষণ করা।
অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের সন্তান নেই, তাদের থেকে যাদের সন্তান রয়েছে, সেই দম্পতি বেশি দিন বাঁচে।
এদিকে আমেরিকান জার্নাল অব হিউম্যান বায়োলজিতে প্রকাশিত আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, পুত্র বা কন্যা সন্তানের জন্ম মায়ের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং আয়ু কমায়।
মেয়ের বাবারা বেশিদিন বাঁচে: গবেষণা
একটি নতুন গবেষণায় দেখা গেছে মেয়ের বাবারা বেশিদিন বাঁচে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, মেয়েরা বাবার জন্য বেশি আনন্দ নিয়ে আসে যা বাবার আয়ু বাড়িয়ে দেয়। বাচ্চা জন্মানোর সময় পিতার স্বাস্থ্য এবং শরীর কীভাবে প্রভাবিত হয় তা নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে এই তথ্য পাওয়া গেছে। জাজিলোলোনিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় এই গবেষণা চালায়। ৪,৩১০ জনেরও বেশি লোকের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়, যার মধ্যে ২,১৭৭ জন মা ও ২,১৬৩ জন বাবা ছিলেন।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যাদের ছেলে সন্তান আছে সেইসব পিতাদের ওপর কোনও ধরণের প্রভাব ফেলেনি। তবে যাদের কন্যা রয়েছে তারা দীর্ঘায়ু হয়েছে।
সমীক্ষায় আরও দাবি করা হয়েছে যে, যে বাবার যত বেশি কন্যা সন্তান, সে তত বেশি বাঁচেন। সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে, প্রতিটি কন্যা সন্তানের জন্য ৭৪ সপ্তাহ বা ৫১৮ দিন বা প্রায় দুই বছর বেশি বাঁচে। অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের সন্তান নেই তাদের থেকে যাদের সন্তান রয়েছে সেই দম্পতি বেশি দিন বাঁচে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।